
বাংলার জাগরণ ডট কম সংবাদদাতা
বাংলার জাগরণ প্রতিবেদন (৬ এপ্রিল, ২০২৫) সেল আইএসপি-তে অবস্থিত পাঁচটি ঐতিহাসিক হাইপারবোলিক কুলিং টাওয়ার আজ দুপুর ১২:১৫-এ নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণের মাধ্যমে ধ্বংস করা হয়েছে। এই ধ্বংস কার্য ৪.২ মিলিয়ন টন ধারণক্ষমতার অত্যাধুনিক স্টিল প্ল্যান্ট প্রকল্পের জন্য সম্পন্ন করা হয়েছে। এই স্থানে আইএসপি-র আধুনিকীকরণের পরিকল্পনা রয়েছে।।
নিরাপত্তার কারণে পুরো শহরের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছিল এবং নাগরিকদের সুরক্ষিত থাকার জন্য আগাম সতর্ক করা হয়েছিল। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে এই কুলিং টাওয়ারগুলি ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নিয়েছে। আইএসপি কুলিং টাওয়ারে পরিকল্পিত বিস্ফোরণে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল অত্যন্ত কঠোর এবং প্রক্রিয়াটি সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

আজ রবিবার (৬ই এপ্রিল ২০২৫) সকালে আইএসপি এলাকায় এই পরিকল্পিত ধ্বংস কার্যক্রম সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন হয়। এটি অত্যন্ত নির্ভুলতা ও নিরাপত্তা প্রোটোকল মেনে করা হয়েছে। কর্মকর্তা ও নিরাপত্তাকর্মীদের তৎপরতা এবং সমন্বয়ের প্রশংসা করা হচ্ছে।
কার্যক্রমের সময়সূচী: ৬ই এপ্রিল, ২০২৫।
১০:৩০: নিষিদ্ধ এলাকার চাক্ষুষ পরিদর্শন এবং নিরাপত্তা প্রহরী মোতায়েন।
১১:১৫: নিষিদ্ধ এলাকার দিকে যাওয়া সমস্ত রাস্তায় ব্যারিকেড স্থাপন।
১১:৩০: সেল প্রতিনিধিদের নিরাপদে দর্শন গ্যালারিতে স্থানান্তর।
১১:৪৫: চার্জ ক্রুকে এলাকা থেকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া এবং বিস্ফোরণের ৩০ মিনিট আগে ৫ সেকেন্ডের বিরতিতে ম্যারুন সাইরেন বাজানো।
১২:০০: সমন্বয়কারী চার্জ ক্রু-এর উপস্থিতি নিশ্চিত করেন এবং প্রান্তে মোতায়েন প্রহরীদের কাছ থেকে এলাকা খালি হওয়ার তথ্য পান।
১২:০৫: রেকর্ডিং ক্যামেরা চালু।
১২:১০: সমন্বয়কারী চূড়ান্ত নিশ্চিতকরণের জন্য প্রহরীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং এলাকার নজরদারির জন্য নিজের অবস্থানে থাকেন।
১২:১২: সমন্বয়কারী সতর্কতামূলক সাইরেন সক্রিয় করেন।
১২:১৫: সমন্বয়কারী ওয়্যারলেস রেডিওর মাধ্যমে ১০ থেকে ৬ পর্যন্ত গণনা করেন এবং নীরবে ৫ থেকে ০ পর্যন্ত গণনা সম্পন্ন করেন।
১২:২০: বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ এলাকা পরিদর্শন করে নিশ্চিত করেন যে এলাকা সম্পূর্ণ নিরাপদ।
১৩:০০: ‘সব পরিষ্কার’ সংকেত হিসেবে ৫ সেকেন্ডের বিরতিতে তিনটি সাইরেন বাজানো হয়। তবে এলাকায় এখনও অননুমোদিত প্রবেশ নিষিদ্ধ।
সেল আইএসপি কর্মকর্তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই বিস্ফোরণ কার্য সম্পূর্ণ পরিকল্পিত ছিল এবং কোনো ক্ষতি বা দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
সুশীল কুমার সুমন
চেয়ারম্যান, আইওএ
ইতিহাসের পাতা থেকে আইএসপি কুলিং টাওয়ারের কিছু কথা:
তখন ভারত ছিল পরাধীন। ব্রিটিশদের থেকে মুক্তির জন্য বিপ্লবের আগুন জ্বলছিল। কিন্তু এরই মাঝে কিছু উচ্চশিক্ষিত বাঙালি যুবক বিজ্ঞানের গবেষণায় মগ্ন হয়ে পড়েন। এমনই একজন ছিলেন শ্রী বীরেন মুখোপাধ্যায়। ইংল্যান্ডে পড়াশোনার সময় তিনি স্টিল কারখানা তৈরির পরিকল্পনা নিয়ে দেশে ফিরে আসেন। সেই মতো দামোদরের একটি প্রাথমিক রূপরেখা তৈরি করা হয়। তাঁর তত্ত্বাবধানে কারখানা নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ১৯১১-১৯১৭ সালের মধ্যে এই সময়ে পাঁচটি হাইপারবোলিক কুলিং টাওয়ার নির্মিত হয়। এর প্রধান কাজ ছিল ইস্পাত শিল্পে ব্যবহৃত গরম জল ঠান্ডা করা।
বাংলার জাগরণ
এই ঘটনা ভারতের শিল্প ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে।