
বাংলার জাগরণ ডট কম সংবাদ দাতা
রানীগঞ্জের প্রত্যন্ত গ্রাম ডামালিয়ায় এবারের রামনবমীর কলস যাত্রা উৎসব আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। প্রবল গ্রীষ্মের দাবদাহকে উপেক্ষা করে, কয়েকশো কুমারী মেয়ে ও যুবতী মাথায় মঙ্গল কলস নিয়ে খালি পায়ে ইট-পাথরের পথে কয়েক মাইল হেঁটে দামোদর নদের পবিত্র জল সংগ্রহ করেছেন। এই জল মন্দিরে স্থাপনের মাধ্যমে উৎসবের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ সম্পন্ন হয়েছে। এবারের আয়োজনে বিশেষভাবে চোখে পড়েছে যুবতীদের একটি দল, যারা দাবি করেছেন, “হনুমানজি আমাদের দাদা।”

একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রী এই কলস যাত্রায় অংশ নিয়ে বলেন, “যেমনভাবে আমরা পথ চলার সময় বা কোনো ভয়, বাধা-বিপত্তির মুহূর্তে হনুমানজির কথা স্মরণ করি, তেমনি তাঁর ওপর আমাদের অগাধ আস্থা জন্মায়। একজন দাদা যেমন তার বোনকে সব বিপদ থেকে রক্ষা করেন, হনুমানজিও আমাদের তেমনভাবে বাধা-বিপত্তি থেকে মুক্তি দেন। তাই তিনি আমাদের দাদার থেকে কম কিসে?” এই কথায় উপস্থিত অনেকেই মুগ্ধ হয়েছেন।
ডামালিয়ার বাসিন্দারা প্রতিটি উৎসবে একটি আলাদা উচ্ছ্বাস ও আনন্দ নিয়ে আসেন। এই গ্রামে রামনবমীর পুজো ও কলস যাত্রা বহু বছর ধরে পালিত হয়ে আসছে। এবারও শোভাযাত্রায় ছিল ব্যাপক উন্মাদনা। মহিলা ঢাকি, তাসা পার্টির বাজনা, হনুমানজির জয়গানের সুর এবং রঙিন ধজা হাতে খালি পায়ে চলা যুবতীদের উপস্থিতি এই উৎসবকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে। সঙ্গে ছিল নানান সাজসজ্জা, যা রামনবমীর এই বিশেষ মুহূর্তকে স্মরণীয় করে রেখেছে।
গ্রামের এক যুবতী জানান, “আমরা এই উৎসবকে দুর্গাপুজোর মতোই গুরুত্ব দিয়ে পালন করি।” এই ধর্মপ্রাণ এলাকায় উৎসবের আনন্দ শুধু কলস যাত্রার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। উদাহরণস্বরূপ, হরিনাম কীর্তনের সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচিতে গ্রামবাসীরা একযোগে নিরামিষ আহার গ্রহণ করেন এবং মাছ-মাংস ত্যাগ করেন। এই একতা ও ভক্তি ডামালিয়ার প্রতিটি উৎসবে এক অনন্য অনুভূতি যোগ করে।
এবারের কলস যাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে হনুমানজির প্রতি অটুট বিশ্বাস ও ভালোবাসা স্পষ্ট। এই উৎসব শুধু ধর্মীয় আচার নয়, বরং গ্রামবাসীদের একতা ও সংস্কৃতির প্রতিফলন।