তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেলপথ: অঞ্চলের উন্নয়নে নতুন দিশা, সহযোগিতার আহ্বান পূর্ব রেলের

বাংলার জাগরণ ডট কম সংবাদদাতা

কলকাতা, ১৮ এপ্রিল ২০২৫
তারকেশ্বর থেকে বিষ্ণুপুর পর্যন্ত নতুন রেললাইন প্রকল্প এই অঞ্চলের সংযোগব্যবস্থা এবং পর্যটনের সম্ভাবনাকে আমূল বদলে দেবে বলে আশাবাদী পূর্ব রেল। এই রেলপথ সম্পন্ন হলে বিষ্ণুপুরের বিখ্যাত টেরাকোটা মন্দিরের সঙ্গে তারকেশ্বরের প্রসিদ্ধ শিব মন্দির সরাসরি যুক্ত হবে। পাশাপাশি, জয়রামবাটী ও কামারপুকুরে যুগপুরুষ রামকৃষ্ণ পরমহংস এবং মা শারদা দেবীর জন্মস্থানের মতো ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলিও এই পথে পড়বে, যা পর্যটকদের কাছে বিশেষ আকর্ষণ।


বর্তমানে বিষ্ণুপুর-জয়রামবাটী-কামারপুকুর-তারকেশ্বর পর্যটন সার্কিট সম্পূর্ণভাবে সড়কপথের উপর নির্ভরশীল, যা সময়সাপেক্ষ এবং ঝুঁকিপূর্ণ। হাওড়া থেকে গোঘাট পর্যন্ত স্থানীয় ট্রেনে যাতায়াতে এখন ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট সময় লাগে। বিষ্ণুপুর পর্যন্ত রেল সংযোগ স্থাপিত হলে এই যাত্রায় আরও ৩০ মিনিট যোগ হবে, অর্থাৎ মোট ৩ ঘণ্টায় পৌঁছানো সম্ভব। অন্যদিকে, বাসে এই পথ পাড়ি দিতে ৫ ঘণ্টারও বেশি সময় লাগে। ইএমইউ ট্রেনে হাওড়া থেকে বিষ্ণুপুরের ভাড়া মাত্র ৩০ টাকা, যেখানে বাসে এটি প্রায় ১৫০ টাকা।
মোট ৮২.৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রেলপথের ৭২.০৭ কিলোমিটার (৮৭%) ইতিমধ্যে চালু হয়েছে। চলতি আর্থিক বছরে গোঘাট-জয়রামবাটী অংশ (১০.৪৩ কিলোমিটার) চালু করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। তবে, ভবদীঘি পুকুরের কাছে ৯০০ মিটার অংশে ২০১৬ সালের মার্চ থেকে স্থানীয়দের বিরোধিতার কারণে কাজ বন্ধ রয়েছে। এই রেললাইন ভবদীঘি পুকুরের ১৭.৫ একর জমির মধ্যে মাত্র ৩ একর অংশ দিয়ে যাবে, যা রেলওয়ে ইতিমধ্যে অধিগ্রহণ করেছে। প্রযুক্তিগত ও ভৌগোলিক সীমাবদ্ধতার কারণে এই রুট পরিবর্তন সম্ভব নয়।
বিলম্বের জেরে প্রকল্পের ব্যয় ২৭০ কোটি টাকা বেড়েছে এবং ৭ বছর পিছিয়ে গেছে। এছাড়া, অঞ্চলের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির সুযোগও হারিয়ে গেছে। সম্প্রতি, কলকাতা হাইকোর্ট একটি জনস্বার্থ মামলায় রায় দিয়ে বলেছে, এই প্রকল্প বৃহৎ জনগোষ্ঠীর জন্য উপকারী এবং জনস্বার্থে কাজ করছে। আদালত আগামী তিন মাসের মধ্যে কাজ শুরুর নির্দেশ দিয়েছে এবং সকলকে রেলওয়ের সঙ্গে সহযোগিতা করার পরামর্শ দিয়েছে।
পূর্ব রেল রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ শুরু করতে প্রস্তুত। প্রকল্পটি সম্পন্ন হলে দ্রুত সংযোগ, কম পরিবহন খরচ, স্থানীয় পণ্যের জন্য বৃহত্তর বাজারে সহজ প্রবেশাধিকার এবং দূষণমুক্ত পরিবহনের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন এই অঞ্চলে জীবনযাত্রার মান উন্নত করবে।
পূর্ব রেল স্থানীয় সম্প্রদায়সহ সকল স্টেকহোল্ডারদের এই প্রকল্প দ্রুত সম্পন্ন করতে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছে, যাতে তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেল করিডোরের মাধ্যমে একটি সংযুক্ত ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা যায়।

Related Posts

RAIL: भारतीय रेलवे में बड़ा फेरबदल: देशभर के 32 मंडलों में नए DRM की नियुक्ति, हावड़ा, आसनसोल और अलीपुरद्वार समेत बिहार के चार मंडलों में भी बदलाव

बंगलार जागरण डॉट कॉम संवाददाता भारतीय रेलवे ने अपने संचालन और प्रबंधन को और अधिक सुदृढ़ और प्रभावी बनाने के उद्देश्य से देशभर के 32 रेल मंडलों में नए मंडल…

Read more

RAIL: ভারতীয় রেলে বড় প্রশাসনিক রদবদল: দেশের ৩২টি রেল মণ্ডলে নতুন DRM নিয়োগ, বাংলা-বিহারের গুরুত্বপূর্ণ মণ্ডলেও বদল

বাংলার জাগরণ ডট কম সংবাদদাতা ভারতীয় রেলওয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পরিচালনা ও পরিষেবা আরও কার্যকর করতে বড় ধরনের প্রশাসনিক পরিবর্তন ঘোষণা করেছে। দেশের মোট ৩২টি রেল মণ্ডলে নতুন মণ্ডল রেল…

Read more

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *