বাংলার জাগরণ ডট কম সংবাদদাতা
কোলকাতা, ২১ এপ্রিল, ২০২৫ (বাংলার জাগরণ):
সিপিএমের অন্দরে নতুন করে ঝড় উঠেছে। আসানসোলের প্রাক্তন সাংসদ ও দলের প্রবীণ নেতা বংশগোপাল চৌধুরীর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। মুর্শিদাবাদের এক সিপিএম নেত্রী, যিনি জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর, সমাজমাধ্যমে এই অভিযোগ তুলে ধরেছেন। এই ঘটনা দলের অভ্যন্তরে ব্যাপক ক্ষোভ ও অস্বস্তির সৃষ্টি করেছে সমাজমাধ্যমে হোয়াইটস চ্যাট ভাইরাল হয়েছে। যদিওবা সমাজ মাধ্যমে যা ভাইরাল হয়েছে তার সত্যতা বাংলার জাগরণ যাচাই করেনি।

অভিযোগকারিণী নেত্রী জানিয়েছেন, বংশগোপাল তাঁর ফেসবুক পোস্টে প্রথমে মন্তব্য করতেন, যা তিনি প্রাথমিকভাবে ইতিবাচকভাবে নিয়েছিলেন। তিনি বলেন, “উনি বড় নেতা, প্রাক্তন সাংসদ। আমার মতো সাধারণ কর্মীর পোস্টে মন্তব্য করলে ভালো লাগাটাই স্বাভাবিক।” কিন্তু পরে পরিস্থিতি বদলে যায়। তিনি অভিযোগ করেন, “একটি সংগঠনের তথ্য দেওয়ার কথা বলে বংশগোপাল আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কিন্তু তিনি ফেসবুক মেসেঞ্জারে অশ্লীল বার্তা পাঠাতে শুরু করেন।” এমনকি, দলের মুখপত্রের সঙ্গে যুক্ত থাকায় তিনি বংশগোপালকে হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর দিয়েছিলেন, যেখানেও তিনি অশোভন বার্তা পাঠিয়েছেন বলে অভিযোগ।
এই নেত্রী আরও দাবি করেছেন, গত বছরের নভেম্বরে তিনি জেলা সিপিএম কমিটির কাছে এই বিষয়ে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিলেন, কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া স্ক্রিনশট ও অডিও ক্লিপগুলি এই অভিযোগের জল্পনাকে আরও উসকে দিয়েছে, যদিও এগুলির সত্যতা বাংলার জাগরণ এর পক্ষ থেকে এখনও যাচাই করা হয়নি।
অন্যদিকে, বংশগোপাল চৌধুরী এই অভিযোগকে ‘ষড়যন্ত্র’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “এর পিছনে আমাদের দলের এবং বাইরের কিছু লোকের লবি কাজ করছে।” তিনি দাবি করেছেন, অভিযোগকারিণী নেত্রী তাঁর কাছে কিছু সুযোগ-সুবিধা চেয়েছিলেন, যা তিনি দিতে পারেননি বলেই এমন অভিযোগ তোলা হচ্ছে।
সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম জানিয়েছেন, “বিষয়টি দলের ইন্টারনাল কমপ্লেন কমিটির (আইসিসি) তদন্তাধীন। রিপোর্ট পাওয়ার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” তবে, দলের অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, সোমবারের রাজ্য কমিটির বৈঠকে এই ঘটনা নিয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনা না হলেও, ফিসফাস চলছে।
দলের একাংশ প্রশ্ন তুলেছে, যাঁরা এই অভিযোগ জেনেও নীরব রয়েছেন, তাঁরাও কি দায় এড়াতে পারেন?
এক প্রথম সারির সিপিএম নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “আমাদের ভোটের জায়গা কমে গেছে। তার মধ্যে এই ধরনের বিড়ম্বনা দলের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ।”
দলের মধ্যে এই ঘটনা নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে। ব্রিগেড সমাবেশের পর থেকে সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া নানা তথ্য দলের ঐক্য ও ভাবমূর্তির উপর প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সিপিএমের অভ্যন্তরীণ তদন্ত কী ফল দেয়, তা নিয়ে সবার নজর রয়েছে।