
বাংলার জাগরণ ডট কম সংবাদদাতা
শ্রীনগর, ২২ এপ্রিল ২০২৫
জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ এই হামলাকে “সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেসামরিক নাগরিকদের উপর সবচেয়ে বড় হামলা” বলে বর্ণনা করেছেন এবং জঙ্গিদের “পশু, অমানবিক এবং নিন্দনীয়” বলে সমালোচনা করেছেন। হামলার দায় স্বীকার করেছে লস্কর-ই-তৈবার সঙ্গে যুক্ত সন্ত্রাসবাদী সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ), যা ২০২৩ সালে ভারত সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ হয়েছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, জঙ্গিরা বাইসারানের ঘন পাইন জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এসে পর্যটকদের উপর গুলি চালায়। একজন বেঁচে যাওয়া মহিলা জানিয়েছেন, “আমরা ভেলপুরি খাচ্ছিলাম, হঠাৎ একজন বন্দুকধারী আমার স্বামীকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়।” হামলার পর সেনাবাহিনী এবং জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ যৌথভাবে ব্যাপক তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে। আহতদের উদ্ধারে হেলিকপ্টার এবং স্থানীয়দের সহায়তায় পনি ব্যবহার করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই হামলার তীব্র নিন্দা করে বলেছেন, “এই জঘন্য কাজের পিছনে যারা রয়েছে, তাদের ছাড়া হবে না।” তিনি আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় গৃহমন্ত্রী অমিত শাহ হামলার পর শ্রীনগরে পৌঁছে জম্মু ও কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা এবং মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহর সঙ্গে উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠক করেছেন। পহেলগাঁও জঙ্গি হামলায় পুতিন নিন্দা জানিয়ে ভারতের পাশে রাশিয়া বলে থাকার কথা জানিয়েছেন।।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই হামলার নিন্দা করে বলেছেন, “এই সহিংসতার কাজ সম্পূর্ণরূপে নিন্দনীয় এবং এর শাস্তি হওয়া উচিত।” জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ) এই হামলার তদন্ত শুরু করেছে। সূত্রের খবর, এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে জঙ্গিরা পহেলগাঁওয়ের বেশ কয়েকটি হোটেলে রেকি করেছিল।
এই হামলার পর কাশ্মীরের পর্যটন শিল্প এবং স্থানীয় অর্থনীতির উপর মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্থানীয় নেতা সাজাদ লোন বলেছেন, “কাশ্মীর দশকের পর দশক ধরে পর্যটকদের আতিথেয়তার জন্য পরিচিত। এই কাপুরুষোচিত হামলা আমাদের এই ঐতিহ্যকে ধ্বংস করতে চায়।”