
বাংলার জাগরণ ডট কম সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি: পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কে নতুন মোড় নিয়েছে ভারত। কাশ্মীরের পহেলগামে সাম্প্রতিক হামলার পর কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা কমিটির (CCS) বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে মোদি সরকার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক কঠোর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে। এই সিদ্ধান্তগুলো দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক ও কৌশলগত সম্পর্কে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
মোদি সরকারের ঘোষিত সিদ্ধান্তগুলো হলো:
১. সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত: ১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত সিন্ধু জল চুক্তি, যা ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সিন্ধু নদীর জল বণ্টন নিয়ন্ত্রণ করে, তা স্থগিত করা হয়েছে। এই চুক্তির অধীনে পাকিস্তান সিন্ধু, ঝিলম ও চেনাব নদীর জলের একটি বড় অংশ পেয়ে থাকে। এই সিদ্ধান্ত পাকিস্তানের কৃষি ও অর্থনীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।
২. পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিল: ভারতে থাকা সমস্ত পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিল করা হয়েছে। তাদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, ভবিষ্যতে পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য ভারতীয় ভিসা দেওয়া বন্ধ করা হবে।
৩. আটারি-বাঘা সীমান্ত বন্ধ: ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে অবস্থিত আটারি-বাঘা সীমান্ত অবিলম্বে বন্ধ করা হয়েছে। এই সীমান্ত দিয়ে বাণিজ্য ও যাতায়াত বন্ধ থাকবে।
৪. পাকিস্তানি কূটনীতিকদের প্রত্যাহার: ভারতে অবস্থিত পাকিস্তান হাইকমিশনের কার্যক্রম কার্যত বন্ধ করা হচ্ছে। পাকিস্তানি কূটনীতিকদের, বিশেষ করে প্রতিরক্ষা, বিমান ও নৌ অ্যাটাশেদের, সাত দিনের মধ্যে ভারত ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
৫. ভারতে পাকিস্তানি দূতাবাসের ক্ষমতা হ্রাস: ভারতে পাকিস্তানি দূতাবাসের কার্যক্রম সীমিত করা হচ্ছে। এর ফলে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও শীতল হতে পারে।
প্রেক্ষাপট ও প্রতিক্রিয়া
সূত্রের খবর, পহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার জন্য পাকিস্তানের হাত রয়েছে বলে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ধারণা। এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় মোদি সরকার এই কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে এই সিদ্ধান্তকে অনেকে ‘ট্রেলার’ হিসেবে আখ্যায়িত করে বলছেন, পাকিস্তানের জন্য আরও কঠিন দিন সামনে অপেক্ষা করছে। তবে, এই সিদ্ধান্তগুলোর সত্যতা নিয়ে কিছু বিতর্কও রয়েছে, কারণ সরকারিভাবে এখনও বিস্তারিত ঘোষণা করা হয়নি।
বিশ্লেষণ
বিশ্লেষকদের মতে, সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক মঞ্চে বিতর্কের জন্ম দিতে পারে, কারণ এই চুক্তি বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত হয়েছিল। অন্যদিকে, সীমান্ত বন্ধ ও ভিসা বাতিলের ফলে দুই দেশের মধ্যে মানুষের যোগাযোগ ও বাণিজ্য সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এই পদক্ষেপগুলো ভারতের ‘শক্ত হাতে মোকাবিলা’ নীতির প্রতিফলন বলে মনে করা হচ্ছে।
উপসংহার
মোদি সরকারের এই সিদ্ধান্তগুলো পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ককে নতুন মাত্রায় নিয়ে যাবে। তবে, এই পদক্ষেপগুলোর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব কী হবে, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। ‘বাঙ্গলার জাগরণ’ এই বিষয়ে আরও আপডেট নিয়ে আসবে।