
বাংলার জাগরণ ডট কম সংবাদদাতা1

সরকারি বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকের অভাব দীর্ঘদিন ধরে একটি জটিল সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ঘাটতির কারণে শিক্ষার মান হ্রাস, শিক্ষার্থীদের প্রতি পর্যাপ্ত মনোযোগের অভাব এবং শিক্ষকদের উপর অতিরিক্ত কাজের চাপের মতো সমস্যা দেখা দিয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের শেখার ফলাফল এবং দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। তবে, দুর্গাপুরের রোটিবাটি হিন্দি উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষকদের আগমন এই সমস্যার সমাধানে এক নতুন দিশা দেখিয়েছে।
গত কয়েক বছর ধরে, দুর্গাপুর ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড সায়েন্স এবং পার্বতী টিচার্স ট্রেইনিং কলেজ থেকে আগত প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষকরা রোটিবাটি হিন্দি উচ্চ বিদ্যালয়ে কয়েক মাসের জন্য শিক্ষার্থীদের এবং বিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। এই প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষকরা শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের শিক্ষাগত সহায়তা প্রদান করেই ক্ষান্ত হননি, বরং সহপাঠ্যক্রমিক কার্যক্রম, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন এবং বিদ্যালয়ের উন্নয়নে বিভিন্ন সৃজনশীল উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।
একটি উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ হিসেবে, প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষকরা বিদ্যালয়ের মিড-ডে মিল সহকারীদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে তাদের শাড়ি বিতরণ করেছেন, যা বিদ্যালয়ের উন্নয়নে তাদের অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়ার একটি প্রশংসনীয় পদক্ষেপ। এই উপলক্ষে আয়োজিত একটি বিশেষ অনুষ্ঠানে স্কুল ব্যবস্থাপনা সম্পাদক জনাব গৌতম মুখার্জী এবং সদস্য জনাব প্রমোদ ননিয়া প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষকদের এই উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন। বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ জনাব কার্তিক মাঝি এবং বিদ্যালয় পরিবারের সকল শিক্ষক প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষকদের প্রশংসাপত্র ও স্মারক প্রদান করে তাদের অবদানকে সম্মানিত করেন।
অনুষ্ঠানটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করেন জনাব সতীশ কুমার। এই উপলক্ষে উপস্থিত ছিলেন অবধেশ ভগত, রামশিস সিং, মুনির শামী, সমীরণ কুন্ডু, রানু চ্যাটার্জি, মুকেশ ঝা, শালিনী শ্রীবাস্তব, সীমা কুন্ডু, চন্দন সিং, সতীশ পণ্ডিত, সুলেখা কুমারী, মমতা রাম, দ্রক্ষা আঞ্জুম, শিক্ষানবিশ শিক্ষিকা ববিতা কুমারী, শ্যামলী কুমারী, খুশবু কুমারী এবং পূজা সিংসহ অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষকদের এই উদ্যোগ শুধুমাত্র শিক্ষক ঘাটতির সমস্যা সমাধানে সহায়ক হয়েছে তাই নয়, বরং বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে নতুন উদ্যম ও উৎসাহ সঞ্চার করেছে। এই ধরনের উদ্যোগ ভবিষ্যতে সরকারি বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক ঘাটতি মোকাবিলায় একটি মডেল হিসেবে কাজ করতে পারে বলে শিক্ষাবিদরা মনে করছেন।