
বাংলার জাগরণ ডট কম সংবাদদাতা
বাংলার জাগরণ, বিশেষ প্রতিবেদক: আগামী ৭ মে, ২০২৫-এ ভারতজুড়ে একটি জাতীয় স্তরের সিভিল ডিফেন্স মক ড্রিল আয়োজিত হতে চলেছে। কেন্দ্রীয় গৃহ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে সমস্ত রাজ্য সরকার এই মক ড্রিল পরিচালনা করবে। এর উদ্দেশ্য হল যুদ্ধ বা জরুরি পরিস্থিতি, যেমন হাওয়ায় হামলার মতো ঘটনায় নাগরিক ও ছাত্রদের নিরাপত্তার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং প্রস্তুতির কার্যকারিতা পরীক্ষা করা। পশ্চিমবঙ্গও এই উদ্যোগে সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছে।

ফাইল ফটো
মক ড্রিলের প্রধান বৈশিষ্ট্য
সাইরেন পরীক্ষা: এই মক ড্রিলের সময় হাওয়ায় হামলার সতর্কতামূলক সাইরেন বাজানো হতে পারে। নাগরিকদের এই সাইরেন শুনে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
প্রশিক্ষণ: সাধারণ নাগরিক, বিশেষ করে ছাত্রদের যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে নিরাপদ থাকার উপায় শেখানো হবে। এর মধ্যে ভবন খালি করা বা নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়ার মতো অনুশীলন অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।
উদ্দেশ্য: এই ড্রিলের লক্ষ্য দেশের সিভিল ডিফেন্স প্রস্তুতি পরীক্ষা করা এবং নাগরিকদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। এটি কোনো প্রকৃত যুদ্ধের ঘোষণা নয়, বরং একটি নকল অনুশীলন।
সরকারি বিজ্ঞপ্তি ও সংবাদ সূত্র
প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো (পিআইবি) এবং প্রেস ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়া (পিটিআই)-এর মতো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এই মক ড্রিল সম্পর্কে তথ্য পাওয়া গেছে। এএনআই-এর একটি প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, লখনঊয়ের পুলিশ লাইনসে ৬ মে, ২০২৫-এ সাইরেন পরীক্ষার রিহার্সাল সম্পন্ন হয়েছে, যা ৭ মে’র মক ড্রিলের প্রস্তুতির অংশ। গৃহ মন্ত্রণালয় স্পষ্ট করেছে যে এই ড্রিল জরুরি প্রস্তুতি জোরদার করার জন্য আয়োজিত হচ্ছে।
এই মক ড্রিল সম্পর্কে তথ্য শেয়ার করা হয়েছে। কিছু পোস্টে এটিকে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্ভাব্য উত্তেজনার সঙ্গে যুক্ত করা হলেও, এই তথ্য আনুষ্ঠানিক এবং অপুষ্ট। গৃহ মন্ত্রণালয় বা অন্য কোনো সরকারি সূত্র এই ধরনের দাবির সমর্থন করেনি।
পশ্চিমবঙ্গে আয়োজন
পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন শহর ও জেলায় এই মক ড্রিল আয়োজিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সম্ভাব্য স্থানগুলির মধ্যে রয়েছে: গ্রেটার কোলকাতা, হাওড়া, হুগলি, আসানসোল-বার্নপুর, চিত্তরঞ্জন, দুর্গাপুর, বর্ধমান, বীরভূম, কুচবিহার, শিলিগুড়ি, কার্সিয়াং,জলঢাকা, কালিম্পং, মাথাভাঙা, মাখলীগঞ্জ,দিনহাটা,ইসলামপুর,রায়গঞ্জ, আলীপুর দুয়ার, বালুরঘাট, ফারাক্কা -খেজুরিয়াঘাট,হাসিমারা, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, মুর্শিদাবাদ, মালদা,
পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, কোলাঘাট,
সম্ভাব্য স্থান ও কার্যক্রম
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: ছাত্রদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তাই স্কুল ও কলেজগুলিতে এই মক ড্রিলের আয়োজন জোরদার হবে।
জনসমাগমপূর্ণ স্থান: রেলওয়ে স্টেশন, বাস স্ট্যান্ড, বাজার এবং অন্যান্য জনবহুল এলাকায় হাওয়ায় হামলার সতর্কতা সাইরেন এবং উচ্ছেদ অনুশীলন হতে পারে।
সীমান্তবর্তী এলাকা: পশ্চিমবঙ্গের বাংলাদেশ ও মায়ানমার সীমান্তবর্তী এলাকা যেমন মালদা, মুর্শিদাবাদ এবং ত্রিপুরায় সিভিল ডিফেন্স প্রস্তুতি পরীক্ষার জন্য মক ড্রিল হতে পারে।
সাইরেন পরীক্ষা: শহরাঞ্চল থেকে গ্রামীণ এলাকা পর্যন্ত সাইরেন বাজানো হতে পারে। নাগরিকদের সাইরেন শুনে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
নাগরিকদের জন্য পরামর্শ
আতঙ্কিত হবেন না: ৭ মে সাইরেন শুনলে ভয় পাবেন না। এটি মক ড্রিলের অংশ।
স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশ মানুন: পুলিশ বা স্থানীয় প্রশাসনের দেওয়া নির্দেশাবলী অনুসরণ করুন।
গুজবে কান দেবেন না: শুধুমাত্র গৃহ মন্ত্রণালয়, রাজ্য সরকার বা নির্ভরযোগ্য সংবাদমাধ্যম থেকে তথ্য গ্রহণ করুন।
গৃহ মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য
গৃহ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই মক ড্রিল কোনো প্রকৃত যুদ্ধের পরিস্থিতি নয়, বরং জরুরি প্রস্তুতি জোরদার করার একটি পদক্ষেপ। নাগরিকদের আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বাংলার জাগরণ-এর পক্ষ থেকে নাগরিকদের প্রতি আহ্বান, ৭ মে’র এই মক ড্রিলে সক্রিয়ভাবে অংশ নিন এবং নিরাপত্তার জন্য প্রশিক্ষণ গ্রহণ করুন। একইসঙ্গে, গুজব এড়িয়ে শান্তি বজায় রাখুন।
সূত্র: পিআইবি, পিটিআই, এএনআই,