
বাংলার জাগরণ ডট কম সংবাদদাতা
আসানসোলের রাজনৈতিক মঞ্চে এক অমলিন নক্ষত্রের আলো নিভে গেল। বর্ষীয়ান রাজনৈতিক নেতা, সমাজসেবী ও আসানসোল-বার্ণপুর শিল্পাঞ্চলের গণমানুষের প্রিয় নেতা ক্যাপ্টেন দা (জন্ম: ৩ জুলাই ১৯৫১) বার্ণপুর হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন। তাঁর প্রয়াণে শুধু আসানসোল নয়, সমগ্র পশ্চিম বর্ধমানের রাজনৈতিক ও সামাজিক মহল শোকস্তব্ধ।

ক্যাপ্টেন দা তাঁর জীবনের প্রথম দিন থেকেই রাজনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁর রাজনৈতিক যাত্রা শুরু হলেও তিনি সিপিএম তথা বামফ্রন্টের সঙ্গে বহু আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে আসানসোলের রাজপথ বহুবার সংগ্রামের সাক্ষী হয়েছে। আসানসোল পৌরসভার কমিশনার হোক এবং পুরনিগমের কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হিসেবে তিনি একাধিকবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। তৎকালীন হিরাপুর বিধানসভা এবং পরবর্তীতে আসানসোল দক্ষিণ ও আসানসোল উত্তর বিধানসভার বিধায়ক প্রার্থীদের পাশে থেকে তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন, তাঁদের সাফল্যের পথ প্রশস্ত করেছেন।
তৃণমূল কংগ্রেস গঠনের পর ক্যাপ্টেন দা এই দলে যোগ দেন এবং শেষ দিন পর্যন্ত তৃণমূলের একজন নিষ্ঠাবান কর্মী হিসেবে কাজ করে গেছেন। তাঁর নিঃস্বার্থ দলীয় নিষ্ঠা এবং জনসাধারণের প্রতি অঙ্গীকার তাঁকে আসানসোলের রাজনৈতিক মহলে এক অনন্য স্থান দিয়েছে। তিনি শুধু একজন নেতাই ছিলেন না, সাধারণ মানুষের কাছে ছিলেন একজন অকৃত্রিম বন্ধু, যিনি সবসময় তাঁদের পাশে থেকেছেন।
ক্যাপ্টেন দার প্রয়াণে তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক, তাপস বন্ধোপাধ্যায়, ভি. শিবদাসন দাশু, অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়, গুরুদাস চট্টোপাধ্যায়, সুদেষ্ণা ঘটক, অভিজিৎ ঘটক,জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, বিধান উপাধ্যায়, উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়, লক্ষণ ঠাকুর, সৌরভ আলি, পূর্ণেন্দু চৌধুরী, অশোক রুদ্র, হরজিৎ সিং-সহ দলের বিশিষ্ট নেতারা তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। মন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, “ক্যাপ্টেন দার মতো নিষ্ঠাবান ও নিঃস্বার্থ নেতা বিরল। তাঁর অবদান আসানসোলের রাজনৈতিক ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।” নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বলেন, “তাঁর প্রয়াণে আমরা শুধু একজন নেতাই হারালাম না, হারালাম একজন পথপ্রদর্শককে, যাঁর অভাব আসানসোল-বার্ণপুর শিল্পাঞ্চল সবসময় অনুভব করবে।”
ক্যাপ্টেন দার রাজনৈতিক জীবন ছিল সংগ্রাম, নিষ্ঠা ও জনসেবার এক অনুপম দৃষ্টান্ত। তিনি কখনও ক্ষমতার লোভে পড়েননি, বরং সবসময় দলের ও জনগণের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়েছেন। তাঁর স্মৃতি আসানসোলের প্রতিটি রাজনৈতিক কর্মী ও সাধারণ মানুষের মনে চিরকাল জ্বলজ্বল করবে।
বাংলার জাগরণ তাঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও সমবেদনা জানাচ্ছে। তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করি।