
বাংলার জাগরণ ডট কম সংবাদদাতা
পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোলের বারাবনি থানার ইটাপাড়া মোড়ে সোমবার বিজেপির ডেপুটেশন কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে তৃণমূল কংগ্রেসের পাল্টা মিছিলের জেরে তীব্র উত্তেজনা ছড়ায়। এই ঘটনায় আসানসোল-গৌরান্ডী হয়ে উত্তর বঙ্গ ও ঝাড়খণ্ড যাওয়ার রাস্তা কিছুক্ষণের জন্য অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এসিপি ইপ্সিতা দত্ত ও বারাবনি থানার পুলিশ বাহিনী কার্যত হিমশিম খায়।

জানা গেছে, ইটাপাড়া কয়লাখনির বিভিন্ন দাবি নিয়ে বিজেপি আমডিহা থেকে একটি মিছিল শুরু করে, যা ইটাপাড়া কয়লাখনিতে স্মারকলিপি জমা দেওয়ার উদ্দেশ্যে ছিল। এর বিরোধিতা করে তৃণমূল কংগ্রেসও পাল্টা জমায়েত করে আমডিয়া মোরে, উদ্দেশ্য ডেপুটেশনে বাধা দেওয়া দাবি বিজেপির। আমডিহা মোড়ে দুপক্ষ মুখোমুখি হতেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। উভয় পক্ষের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে তীব্র বাক্যবিনিময় শুরু হয়, যা পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তোলে।
বিজেপির স্থানীয় নেতা অরিজিত রায়ের অভিযোগ, তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের মিছিলে বাধা সৃষ্টি করে, ফলে তারা স্মারকলিপি জমা দিতে পারেনি। বিজেপির জেলা সভাপতি দেবতনু ভট্টাচার্য বলেন, “এটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের দাবি তুলে ধরতে চেয়েছিলাম, কিন্তু তৃণমূল তা বানচাল করেছে। আমরা কয়েক দিনের মধ্যে পুনরায় বড় আন্দোলনে নামছি, তখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হলে তা আমরা বুঝে নেব ”
অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি অসিত সিংহ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্বের দাবি, বিজেপির মিছিলের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছেন, এবং তাদের দলের কোনও সরাসরি হস্তক্ষেপ ছিল না। তৃণমূল লাল্টু রায় বলেন, “জনগণের ক্ষোভের মুখে বিজেপির মিছিল ব্যাহত হয়েছে। এটি জনতার প্রতিরোধ, আমাদের দলের নয়।”
ঘটনাস্থলে উপস্থিত বারাবনি থানার পুলিশ বাহিনী দ্রুত হস্তক্ষেপ করে দুপক্ষকে আটকে দেয়। পুলিশের তৎপরতায় উভয় দলের কর্মী-সমর্থকদের সরিয়ে দেওয়া হয়, এবং অবরুদ্ধ গৌরান্ডী রাস্তায় যান চলাচল পুনরায় স্বাভাবিক করা হয়। এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, “আমরা দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। কোনও হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেনি। এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে আমরা সতর্ক রয়েছি।”
এই ঘটনা স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আসানসোলের এই ঘটনা আগামী দিনে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বকে আরও তীব্র করতে পারে। বর্তমানে আমডিহা মোড়ে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে, তবে পুলিশ এলাকায় নিবিড় নজরদারি চালাচ্ছে।