
আসানসোলের কুমারপুর এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে চলা তালাব বাঁচানোর লড়াইয়ে এসেছে নতুন মোড়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অবিরাম প্রচেষ্টা এবং আন্দোলনের পর, আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (ADDA) এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেছে। ADDA-র একটি দল লোয়ার কুমারপুর এলাকায় পৌঁছে পুকুরের পাশে একটি নোটিশ টাঙিয়েছে, যাতে পুকুরের পুনর্জনম, সৌন্দর্যায়ন এবং অবৈধ নির্মাণ অপসারণের কথা বলা হয়েছে।

কুমারপুর গ্রাম উন্নয়ন সমিতির নেতৃত্বে এই আন্দোলনের অন্যতম সদস্য গোবর্ধন মণ্ডল জানিয়েছেন, এই তালাব শুধুমাত্র জলের উৎসই নয়, এলাকার সাংস্কৃতিক ও পরিবেশগত ঐতিহ্যেরও একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তিনি বলেন, “আমরা বহু বছর ধরে এই তালাব বাঁচাতে সংগ্রাম করে আসছি। বারবার পৌর নিগম এবং প্রশাসনের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। এখন ADDA-র পক্ষ থেকে পদক্ষেপের আশা জাগছে।”
ADDA-র নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে যে, পুকুরের ৭৬ শতক এলাকার উপর তাদের অধিকার রয়েছে। এই এলাকায় তালাবকে পুনরুজ্জীবিত করা হবে, যার অধীনে সৌন্দর্যায়নের কাজ, আলোর ব্যবস্থা এবং অবৈধ নির্মাণ অপসারণ করা হবে। নোটিশ অনুসারে, তালাব ভরাটের কার্যক্রম বন্ধ করতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
স্থানীয় বাসিন্দারা এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন, তবে সতর্কতাও অবলম্বন করছেন। গোবর্ধন মণ্ডল বলেন, “ADDA-র এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক উদ্যোগ, কিন্তু যতক্ষণ না এই প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবে রূপ নেয়, ততক্ষণ আমরা পুরোপুরি ভরসা করতে পারছি না। আমরা চাই পুকুরটিকে তার মূল রূপে ফিরিয়ে আনা হোক এবং এটি সর্বজনীন ব্যবহারের জন্য সংরক্ষিত হোক।”
এর আগেও, মেয়র বিধান উপাধ্যায়ের নির্দেশে আসানসোল পৌর নিগমের একটি দল ২০২৫ সালের মে মাসে এই এলাকার জরিপ করেছিল। তখন পুকুর ভরাটের অভিযোগের তদন্ত করা হয়েছিল। সেই সময়ও স্থানীয়রা পুকুর বাঁচাতে আন্দোলন করেছিলেন এবং ADM সহ DL&LRO কার্যালয়ে স্মারকলিপি জমা দিয়েছিলেন।
ADDA-র এই নোটিশের পর এখন সকলের দৃষ্টি প্রশাসনের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে। স্থানীয়রা আশা করছেন যে তালাব শুধু বাঁচানোই হবে না, বরং এটিকে একটি সুন্দর ও কার্যকরী সর্বজনীন স্থান হিসেবে গড়ে তোলা হবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রকাশিত হয়নি, তবে এই বিষয়ে শীঘ্রই আরও অগ্রগতির প্রত্যাশা করা হচ্ছে।