
বাংলার জাগরণ ডট কম সংবাদদাতা
দুর্গাপুর, ১৪ জুন ২০২৫: দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানায় নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে উত্তেজনা তুঙ্গে। তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের (আইএনটিটিউসি) রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, যে শ্রমিক নেতা কারখানা কর্তৃপক্ষকে নিয়োগের তালিকা দিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হবে। শনিবার দুপুরে দুর্গাপুর হাউসে তৃণমূল সাংসদ কীর্তি আজাদ এবং পঞ্চায়েত, গ্রামোন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারের উপস্থিতিতে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন।

ঋতব্রত বলেন, “দুর্নীতি রুখতে আমরা কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছি। নিয়োগের ক্ষেত্রে কারখানা কর্তৃপক্ষই সিদ্ধান্ত নেবে, তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের কোনো হস্তক্ষেপ থাকবে না। তবু কিছু নেতা নিয়োগের তালিকা দিচ্ছেন, যা অনৈতিক। যে ঠিকাদার পিএফ, ইএসআই মেরে দিচ্ছে বা পে-স্লিপ দিচ্ছে না, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা তো নেওয়া হবেই। সঙ্গে যদি কোনো নেতা জড়িত থাকেন, তাঁদেরও দায় নিতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে আইএনটিটিউসি থানায় অভিযোগ দায়ের করবে।”
তিনি আরও জানান, দুর্গাপুর ও মিশ্র ইস্পাত কারখানায় বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা চালু করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। তিনি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেন, “আমরা বায়োমেট্রিক চালু করেই ছাড়ব।” তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের টোল-ফ্রি নম্বরে অভিযোগের ভিড় উঠছে বলেও জানান তিনি। আগামী ২৫ জুন থেকে দুর্গাপুর শহরের বিভিন্ন প্রান্তে এই টোল-ফ্রি নম্বর সম্বলিত হোর্ডিং লাগানো হবে।
অন্যদিকে, বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে তীব্র কটাক্ষ করেন। তিনি বলেন, “এতদিন ধরে তৃণমূলের নেতারা লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানায় চাকরি দিয়েছেন। আসানসোলে এই দুর্নীতি আরও ভয়াবহ। যাঁরা টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের পরিবারের ভবিষ্যৎ কী হবে? দ্রুত এই নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে বিজেপি জেলায় বৃহত্তর আন্দোলন শুরু করবে।”
তৃণমূল নেতৃত্ব জানিয়েছেন, নিয়োগ প্রক্রিয়া এখন থেকে পোর্টালের মাধ্যমে স্বচ্ছভাবে হবে। তবে বিজেপি নেতারা প্রশ্ন তুলেছেন, অতীতে দুর্নীতির শিকার পরিবারগুলির জন্য কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে? এই ইস্যুতে রাজনৈতিক তরজা তীব্র হওয়ায় দুর্গাপুরের রাজনৈতিক মহলে উত্তেজনা বাড়ছে।
দুর্নীতির এই অভিযোগ কীভাবে সমাধান হয় এবং আইনি পদক্ষেপ কতদূর এগোয়, তা নিয়ে সকলের নজর রয়েছে।