
বাংলার জাগরণ ডট কম সংবাদদাতা

ফাইল ফটো
কলকাতা, ২২ জুন ২০২৫: বঙ্গ রাজনীতিতে ফের উত্তাপ ছড়িয়েছে দিলীপ ঘোষকে ঘিরে। ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের পরিকল্পনা করছেন বলে জল্পনা তুঙ্গে। এই গুঞ্জন শুধু পদ্ম শিবিরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই, ছড়িয়েছে দলের বাইরেও। সূত্রের দাবি, দিলীপ নাকি ইতিমধ্যে গোপন বৈঠক করেছেন, যেখানে নতুন দলের রূপরেখা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে এই বৈঠকের সত্যতা বা কারা এতে অংশ নিয়েছেন, তা নিয়ে রহস্য ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে নতুন দলের নাম হতে পারে ‘পশ্চিমবঙ্গ হিন্দুসেনা’। এই দলের সঙ্গে বিজেপির কিছু প্রাক্তন নেতা ও কর্মী যুক্ত হতে পারেন বলেও শোনা যাচ্ছে। কলকাতা ও বিধাননগরে একাধিক গোপন বৈঠক হয়েছে বলে দাবি করা হলেও, এই বৈঠকে কারা উপস্থিত ছিলেন, তা নিয়ে স্পষ্ট কোনও তথ্য মেলেনি। জল্পনায় নানা গোত্রের নেতা-নেত্রীর নাম উঠলেও, তাঁদের অধিকাংশই বৈঠকে থাকার কথা বা এমন কোনও বৈঠক হওয়ার কথা অস্বীকার করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিজেপির এক প্রবীণ নেতা জানিয়েছেন, “বৈঠক হয়েছে বলে শুনেছি। তবে আমি সেখানে ছিলাম না। কারা ছিলেন বা কী আলোচনা হয়েছে, তা আমার জানা নেই।” এদিকে, গত শুক্রবার সল্টলেকের এক গোপন ঠিকানায় প্রায় ২৫ জন সদস্য নিয়ে বৈঠক হয়েছে বলে কিছু সূত্র দাবি করেছে। এই বৈঠকে দিলীপ ছাড়াও বিজেপির কয়েকজন নিষ্ক্রিয় নেতা উপস্থিত ছিলেন বলে গুঞ্জন। তবে এই তথ্যের সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।।
দিলীপ ঘোষ “বাংলার জাগরণ ডট কম” কে বলেছেন, ‘‘এ রকম কিছুই এখনও পর্যন্ত হয়নি। কোমরে ব্যথায় কয়েক দিন কষ্ট পাচ্ছিলাম। ঘর থেকে বেরোতেই পারছিলাম না। অনেক দিন পরে যোগ দিবস পালন করতে বেরিয়েছিলাম। আর আমার নামে এ সব বলে যাচ্ছে।’’ সল্টলেকে শুক্রবার ২৫ জনকে নিয়ে ‘বৈঠক’, দলের নাম স্থির করে নেওয়া, সেই নাম লেখা টি-শার্ট বিলি হওয়া, এ সব জল্পনাই তা হলে পুরোপুরি ভিত্তিহীন? দিলীপ বললেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত এ রকম কোনও খবরই নেই। আমি চুপচাপ বসে বসে সব দেখছি। আমার নামে কত কিছু চলছে।’’
তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, দিলীপ বর্তমানে বিজেপির অন্দরে কোণঠাসা। ২০১৯ সালে তাঁর নেতৃত্বে বিজেপি বাংলায় ১৮টি লোকসভা আসন জিতলেও, পরবর্তীতে দলের নতুন নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব বেড়েছে। সম্প্রতি দিঘায় জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমন্ত্রণে সস্ত্রীক উপস্থিত থাকায় তৃণমূলে যোগদানের জল্পনাও তৈরি হয়েছিল। যদিও দিলীপ স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, তিনি তৃণমূলে যোগ দেবেন না।
রাজনৈতিক মহলের মতে, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে দিলীপ ঘোষের এই সম্ভাব্য পদক্ষেপ বঙ্গ রাজনীতিতে নতুন মোড় আনতে পারে। বিজেপির একাংশ মনে করছে, দিলীপের নতুন দল গঠনের পরিকল্পনা হিন্দু ভোটকে কেন্দ্র করে। তবে এই জল্পনা কতটা বাস্তবে রূপ নেবে, তা সময়ই বলবে।