
বাংলার জাগরণ ডট কম সংবাদদাতা
কলকাতা, ২৯ জুন ২০২৫: পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও হাওড়ার মধ্যে বহু প্রতীক্ষিত নতুন মেমু ট্রেন পরিষেবা (৬৮১২১/৬৮১২২) শনিবার কলকাতার সাঁতরাগাছি রেল স্টেশনে ভারত সরকারের রেল, তথ্য ও সম্প্রচার এবং ইলেকট্রনিক্স ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব স্বশরীরে উপস্থিত থেকে সবুজ পতাকা নেড়ে উদ্বোধন করেন। এই ট্রেন পরিষেবা বাঁকুড়া ও মসাগ্রাম সেকশনের মাধ্যমে চলাচল করবে, যা এই অঞ্চলের যাত্রীদের জন্য সাশ্রয়ী, সুবিধাজনক এবং দ্রুত যাতায়াতের সুযোগ করে দেবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জনসাধারণকে সম্বোধন করতে গিয়ে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব এই নতুন ট্রেন পরিষেবার বিভিন্ন সুবিধার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “এই ট্রেন পরিষেবা শুধুমাত্র যাত্রীদের সুবিধাই দেবে না, বরং বাঁকুড়া-মসাগ্রাম সেকশনের রেলপথের পূর্ণ সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করবে। এটি এই অঞ্চলের সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।” তিনি আরও জানান, রেলওয়ের চলমান এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাগুলি এই অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করবে।
এই নতুন মেমু ট্রেন পরিষেবার ফলে পুরুলিয়া থেকে হাওড়ার দূরত্ব উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। পূর্বে খড়গপুর রুটে এই দূরত্ব ছিল প্রায় ৩২২ কিলোমিটার, যা এখন মসাগ্রাম হয়ে মাত্র ২৮২ কিলোমিটারে নেমে এসেছে। এর ফলে যাত্রীদের সময় এবং খরচ উভয়ই সাশ্রয় হবে। ট্রেনটি পুরুলিয়া, আদ্রা, বাঁকুড়া, সোনামুখী, বোয়াইচান্দি এবং মসাগ্রামের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলির পাশাপাশি বাঁকুড়া-মসাগ্রাম সেকশনের প্রায় ৩০টি হল্ট স্টেশনে থামবে। এটি এই অঞ্চলের যাত্রীদের জন্য সরাসরি এবং সাশ্রয়ী রেল যোগাযোগের সুযোগ তৈরি করবে।
বাঁকুড়ার বাসিন্দা বিদ্যুৎ দাস এই উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, “প্রাক্তন সাংসদ এবং রেলওয়ে বোর্ডের প্রাক্তন চেয়ারম্যান জনপ্রিয় সিপি আই এমের নেতা বাসুদেব আচার্য এই রুটের জন্য অনেক আগে থেকেই স্বপ্ন দেখেছিলেন। তিনি এই রেলপথ তৈরির জন্য জরিপ থেকে শুরু করে সব কিছুই করিয়েছিলেন। বহু বছর পর তাঁর সেই স্বপ্ন পূরণ হল। তিনি বেঁচে থাকলে খুবই খুশি হতেন। রেলমন্ত্রী থেকে শুরু করে সমস্ত রেল কর্মীদের ধন্যবাদ।”
এই ট্রেন পরিষেবা ৩০ জুন থেকে শুরু হবে, যেখানে ৬৮১২১ হাওড়া-পুরুলিয়া মেমু ট্রেন বিকেল ৪:১৫-এ হাওড়া থেকে ছাড়বে এবং রাত ১১:৫৫-এ পুরুলিয়ায় পৌঁছবে। অন্যদিকে, ৬৮১২২ পুরুলিয়া-হাওড়া মেমু ট্রেন ভোর ৪টায় পুরুলিয়া থেকে ছাড়বে এবং সকাল ১১:৪০-এ হাওড়ায় পৌঁছবে। এই ট্রেন শুক্রবার ছাড়া সপ্তাহের ছয় দিন চলাচল করবে।
এই নতুন রেল পরিষেবা পুরুলিয়া, বাঁকুড়া এবং হাওড়ার মধ্যে যোগাযোগকে আরও সহজ করবে এবং এই অঞ্চলের অর্থনীতি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে। স্থানীয় বাসিন্দারা এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং এটিকে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।