
বাংলার জাগরণ ডট কম সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা, আসানসোল:
আর্থিক অনটন আর ঋণের বোঝা সহ্য করতে না পেরে চরম সিদ্ধান্ত নিল আসানসোলের এক পরিবার। রাসডাঙ্গা সুমথ পল্লীর জাহাজ বাড়িতে এক মর্মান্তিক ঘটনায় মা ও পোষা বিদেশি কুকুরদের বিষ খাইয়ে নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন ছেলে। এতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ৭৫ বছরের যুথিকা দাস ও তাঁদের একটি বিদেশি পোষ্য কুকুরের। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন যুথিকা দেবীর একমাত্র ছেলে, ৪৫ বছরের অবিবাহিত অরবিন্দ দাস ওরফে পুষান।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাতে বহুক্ষণ দরজা না খোলায় স্থানীয় বাসিন্দারা সন্দেহ করেন এবং খবর দেন পুলিশকে। আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ এসে দরজা ভেঙে ঘরের ভিতরে ঢুকে যুথিকা দেবীর মৃতদেহ ও পুষানকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে। একইসঙ্গে বাড়ির আরও দুটি পোষা কুকুরকেও মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ এটিকে আত্মহত্যার প্রচেষ্টা বলেই মনে করছে। জানা গিয়েছে, যুথিকা দাস ও তাঁর ছেলে পুষান দীর্ঘদিন ধরে ঋণের বোঝায় জর্জরিত ছিলেন। নিজেদের বাড়িটিও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে বন্ধক রাখতে হয়েছিল। আত্মহত্যার আগে পুষান তাঁর এক বন্ধুকে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে একটি আত্মহত্যার নোট পাঠিয়েছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। সেই নোটে তিন-চারজনের নাম উল্লেখ করেছেন তিনি, যাদের বিরুদ্ধে মানসিক চাপে ফেলার অভিযোগ রয়েছে।

মৃত মা যূথিকা দাস ও আহত ছেলে অরিন্দম দাস
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, অরিন্দম ও ভাড়াটিয়ার মধ্যে বাড়ি কেনাবেচা ও কন্সট্রাকশন নিয়ে অর্থনৈতিক বিবাদ চলছিল। বাড়ির অনুমতি ছাড়াই নাকি ভাড়াটিয়া নির্মাণকাজ শুরু করেছিল, যা নিয়ে পারিবারিক অশান্তি বাড়ে।
এদিকে ডিসিপি সেন্ট্রাল ধ্রুব দাস জানিয়েছেন, আসানসোল দক্ষিণ থানায় একটি মামলা রুজু হয়েছে এবং ঘটনার তদন্ত চলছে। মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য আসানসোল জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট আসার পর স্পষ্ট হবে মৃত্যুর পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে কিনা।
এখনও হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন পুষান। তাঁর অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল হলে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করবে বলে জানিয়েছে। মর্মান্তিক এই ঘটনার জেরে এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।