
বাংলার জাগরণ ডট কম সংবাদদাতা
আসানসোল, ৬ আগস্ট ২০২৫: নিজের নাবালিকা মেয়েকে ধ*র্ষণ করে শ্বাসরোধে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত বাবাকে ফাঁসির সাজা ঘোষণা করেছে আসানসোলের বিশেষ পকসো আদালত। বুধবার বিচারক সুপর্ণা বন্দ্যোপাধ্যায় এই কঠোর রায় ঘোষণা করেন। মাত্র এক বছর তিন মাসের মধ্যে এই মামলার বিচারপ্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়, যা ন্যায়বিচারের দ্রুততার একটি উল্লেখযোগ্য নজির।

২০২৪ সালের ১৩ মে সকালে আসানসোলের হীরাপুর থানার নরসিংবাঁধ এলাকায় এই হাড়হিম করা ঘটনা সামনে আসে। এক গৃহবধূর আর্তনাদে প্রতিবেশীদের ঘুম ভাঙে। তারা দেখেন, ১৫ বছরের এক নাবালিকা বিছানায় পড়ে রয়েছে, গলায় দড়ির দাগ এবং নাক-কান দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছে। মেয়েটির মা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাইলেও অভিযুক্ত টোটো চালক বাবা বাধা দেয়। প্রতিবেশীদের জোরালো উদ্যোগে মেয়েটিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মেয়েটির মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযুক্ত বাবাকে গ্রেপ্তার করে। তদন্তে এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই হত্যাকাণ্ডের বীভৎসতা স্পষ্ট হয়। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে জানা যায়, মেয়েটিকে খুনের আগে ধর্ষণ করা হয়েছিল। এরপর দড়ি দিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করা হয়। পুলিশ একটি ডাস্টবিন থেকে খুনে ব্যবহৃত দড়িটি উদ্ধার করে। এই মামলার তদন্তকারী আধিকারিক শুভাশিস বন্ধোপাধ্যায়ের তদন্তের পর জানা যায়, এই জঘন্য অপরাধের পিছনে অভিযুক্ত বাবাই মূল পরিকল্পনাকারী।

আইনজীবী সোমনাথ চট্টোরাজ ও তদন্তকারী পুলিশ শুভাশিস বন্ধোপাধ্যায়।
আইনজীবী সোমনাথ চট্টোরাজ বলেন, বিচার প্রক্রিয়ায় ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। সোমবার আসানসোলের বিশেষ পকসো আদালতে বিচারক সুপর্ণা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেন। বুধবার তিনি এই ঘটনাকে ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম’ অপরাধ হিসেবে আখ্যায়িত করে ফাঁসির সাজা ঘোষণা করেন। আদালত সূত্রে জানা গেছে, এই রায় সমাজে অপরাধ দমনে একটি শক্তিশালী বার্তা দেবে।
এই ঘটনা এলাকায় ব্যাপক শোক ও ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এই রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।।