বাংলার জাগরণ ডট কম সংবাদদাতা

সকাল থেকে রাত্রি
অস্মিতা , তুমি নাকি এখন বাংলার শ্রেষ্ঠ যাত্রী,
যাকে নিয়ে দিনরাত আলোচনা হচ্ছে-
কোথাও ভাষা সন্ত্রাস,
কোথাও আক্রান্ত পরিযায়ীরা।
অস্মিতা ,তোমার মুখের বাংলা ভাষাকে
যারা কেড়ে নিতে চায়
তাদের খুঁজতে গিয়ে মৃত মানুষের দেখা মেলে।
অস্মিতা ,এচিঠি যখন লিখছি তোমায়
তখনো বাতাসে লাশের গন্ধ,
আজও মৃত্যুর নগ্ন নৃত্য রাজনীতির দরজায় দরজায়,
ধর্ষিতার চিৎকার কিংবা তার পোড়া মুখ,
শুধু ঘুমের মধ্যে নয় ,সকাল থেকে দুপুর
মায়েরা সে ছবি দ্যাখে রাজ্যে রাজ্যে।
কেউ তো ভুলিনি দশকের পর দশক
শুধু নানা পতাকায়
সেই একই ছবির ফ্রেম বদলে গেছে।
আজও ভাষা নিয়ে বেঁচে থাকার লড়াইয়ে
বাংলা আজও গর্বে বুক বাঁধে,
বাঙালির অস্মিতা নিয়ে কথা হলেই
বিপ্লব থেকে সংস্কৃতি ,স্বাধীনতা থেকে সিনেমা,
আন্দামান কিংবা সেলুলার জেলে
পাথরের গায়ে আজও খোদাই হয়ে আছে
শুধু বাঙালির পর বাঙালি শহীদের নাম।
অস্মিতা তোমার মত যারা মাটিতে লুটিয়ে থাকা মানুষের রক্ত
কপালে লাগিয়ে শপথ নিয়েছিল–
নিষিদ্ধ আধার কে ভেঙে দিয়ে
আলোর দিশাকে পৌঁছে দেব ঘরে ঘরে, ভালোবাসার স্তম্ভে
সেই তুমি, অস্মিতা নামেই থেকে গেলে।
পঁচিশে বৈশাখ কিংবা ১১ই জ্যৈষ্ঠের মত
হয়তো আজ তোমার জন্মদিন।
প্রতিবারের মতো এবারেও হয়তো মোমবাতি জ্বলবে,
হয়তো ফুলের তোড়া হাতে কেউ কেউ এসে বলবে
বাঙালির তুমিই অস্মিতা।
নিয়ন আলোর নিচে নতুন ফুলের গন্ধে আজও
অনাহারী মানুষেরা ভিড় করে এসে বলে
কাজ চাই কাজ দাও।
দিনরাত এক করে ওদের মুখের খাবার জোগাতে
এই বাংলায় নতুন পথ খোঁজো তুমি ,অন্যের হাত ধরে ধরে।
এখনো রক্তের দাগ লেগে আছে পুরনো কাপড়ে,
বয়সটা যাই হোক, ঝোড়ো বাতাস রুখতে
চালের বস্তায় হাত দিয়ে মাপার চেষ্টা করো
আর কতজনের মুখে তুমি তুলে দেবে ভাত।
ঘুমোনোর চেষ্টা করেও ঘুম আসে না
শুধু শুধু ভাবা কিভাবে কাটবে রাত?
গভীর রাতেই এখনো সেই শিশুর চিৎকার
মাগো খেতে দাও।
আসেনা ঘুম তবু জেগে থাকে অস্মিতারা।
“স্বাধীনতা” শব্দটা শুধু নিজেদের অধীনে নয়
যারা বাংলার এই অস্মিতাকে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করতে চায়,
পরাধীন শরীরটা কিংবা নিথর মনকে
প্রিয়তম স্বজনের মতো হৃদয়ের বাঁধনে আর একা নয়
,এসো এই পারিজাতের বাগানে
অস্মিতা কে বাঁচিয়ে রাখতে চাই।
অভিমানী মনকে জোয়ারের মুখে ঠেলে দিয়ে
আরো একবার এসো খুঁজি —
কতটা ভুল পথে হেঁটেছে ওরা এই বাংলায়?






